Wednesday, 11 March 2020

মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এর বিখ্যাত কবিতাবলী

আমাদের ঘর



বাংলাদেশের একটি স্হানে একটি ছোট ঘর
শুনতে পাই সেথায় নিতি আব্বু, আম্মুর স্বর।
দুই ভাই, দুই বোন মজা করি রোজ
সদা মোরা একত্রে খেতে বসি ভোজ।
আম্মুর রান্না করা কত মজার ভোজ
তৃপ্তি নিয়ে খাই মোরা ভাইয়ে, বোনে রোজ।

সন্ধ্যা হলে বসে পড়ি পড়ার টেবিলে
আম্মু নিজে পড়িয়ে দেন কোথাও আটকে গেলে।
বাহির থেকে আব্বু আসেন সাথে নিয়ে মজা
সবাই মিলে খেয়ে ফেলি থাকতে থাকতে তাজা।
ভাই - বোন পরস্পরকে কত ভালবাসি
আনন্দে আছি মোরা চোখে - মুখে হাসি।

আমাদের বন


রোদ দুপুরে বনের ভিতর

গুল্ম লতার মাঝে

জবা - বেলীর নৃত্য চলে

অপরুপ সাজে ।

ফড়িং নাচে আপন মনে

ডুমুর গাছের তলে

কৃষ্ণচূড়ার রঙ্গিন ফুলে

দোলা লাগে মনে ।

স্নিগ্ধ পবন বয়ে যায় বনভূমি জুড়ে

হরিণ পাল খাদ্য খুঁজে হেথায় - হোথায় চষে ।

কাক ডাকে কোকিল ডাকে পালক নেড়ে নেচে

এই খানেতে থাকতে চাই চিরকাল বেঁচে ।

আমাদের ছোট গাঁয়ের ছোট সেই বন

বায়ু দেয় ফল দেয় সারা জীবন ক্ষণ ।

আমাদের বনখানি হাজার বছর ধরে

কত স্মৃতি বয়ে বেড়ায় আঁচল ভরে ভরে ।

বাপ - চাচা পূর্ব পুরুষ সারা জীবন ভর

এই বনেতে খুঁজে পেতেন আপন শীতল ঘর ।

যে কালে ময়না পালে

বুলি শিখে কথা বলে

কিশোর বাবুর খুশি মেলে

যে কালে ময়না পালে

পাড়া গাঁয়ে সাড়া ফেলে।

বাম হাতে ঘুড়ি নিয়ে

ডান হাতে খাঁচা ধরে

কিশোর বাবু কথা বলে

ছুটে যায় দিঘীর পাড়ে।

খানিক পরে ঘুড়ি উড়ে

গগণ পানে ছো ছো করে

যায় ছুটে যায় রশি ছুটে

কিশোর বাবু খাঁচা ফেলে

দৌড়ে যায় নদীর ঘাটে।

প্রিয় সাথী সোহাগ এসে

খাঁচা দেখে হেসে ফেলে

খুশির ছটে ময়না নিয়ে

সোহাগ করে বুলি বলে ।

সারা বিকাল কেঁদে - কেঁদে

কিশোর বাবু অর্ধ - মরা

বাবা - মায়ের বকা খেয়ে

মনের জ্বালায় সুখে খরা।

সন্ধ্যা হলে সোহাগ আসে

দুই হাতে খাঁচা নিয়ে,

ফিরিয়ে দেয় বুলি পাখি

প্রকৃত বন্ধুর পরিচয় দিয়ে।

যে কালে ময়না পালে

ভুলে কি কেউ কস্মিন কালে?

বারংবার চায় ফিরে যেতে

অপূর্ব স্বাদে পঞ্জিকা সাল

শিশু পার্কে যাই


ভাইরে ভাইরে ভাই,
শিশু পার্কে যাই।
দলে দলে দোলনা চড়ে
কত মজা পাই!
খেলনা দিয়ে খেলার মাঝে
হঠাৎ ফুটে নাই।
মনে প্রাণে চাই
ওটা ফিরে পাই।

কাড়ি কাড়ি বেলুন দেখি
সারা পার্ক জুড়ে,
লাল বেলুন নীল বেলুন
রংধনুর সাজে-
ওড়ে যায় আকাশ পানে
সারি সারি ভাঁজে।

আমিও চাই ওড়ে যাই
বেলুনের সাথে,
ধরে ফেলি রংধনু
উল্লাসে মেতে।


বাংলাদেশ
স্বাধীন বাংলাদেশ !

ধরণীর বুকে আকাঙ্ক্ষার ভূমি মোদের,

মোদের চিরায়ত মঞ্জিল ।

ফুল - ফল ও ফসলে রহে আবাদ

জিন্দেগী মোদের শান্তির আস্বাদ,

হিন্দু - মুসলিম সাম্যের মৈত্রী - প্রীতির বন্ধনে

দিকে দিকে হেথা ধ্বনিছে মানবতার কল্যাণ,

মজলুমের স্মৃতির একাত্তরে অম্লান

যারা তলাবিহীন ঝুড়ি,যারা অন্ন হারা

এই মঞ্জিলে আজ খুঁজে পাচ্ছে তারা

--- জীবনের সঞ্চয় অফুরান ।।

অধিকার বিহীন ছিল যারা সীমাহীন,

এ মাটি আজ তাদের স্বপ্ন ফলনে রঙ্গিন।

অবনীর বুকে স্বীকৃত মডেল মোরা আজ,

জীবনের নানা সূচকের লক্ষ্য পূরণের অধিকারে ।

পার্বত্য শৈল কেওকারাডং শীর্ষ,

চিরায়ত জননী মোদের জন্মভূমি,

দুনিয়ার জান্নাত সগৈরবে বুলন্দ।।

নয়ন জুড়ানো সমুদ্র সৌকত

অঙ্গ ধৌত গৌরব শানিত,

পদ্মা - যমুনা -ডাকাতিয়া বাহিত -

স্নিগ্ধ অমৃত ধারা ।

দেশের তরে সারাটি জীবন ভরে

মোরা জাগ্রত কর্মী, মোরা স্বপ্ন পূরণে দৃপ্ত ।

জোনাক জ্বলে উঠে

চাঁদনী রাতে ঘরের পিছে

গুল্ম - লতার মাঝে

মিট - মিট -মিট আলো ছড়ায়

দৃষ্টিনন্দন সাজে ।

কুমড়ো ফুলে দোয়েল পাখি

ডাকছে খোকায় শেষে,

ঝাঁকে ঝাঁকে সারি সারি

জোনাক জ্বলে উঠে ।

এমনি সময় খোকা বাবু

ঘরের বাইরে এসে

একটি জোনাক ধরে ফেলে

দু' ঠোঁট মিলে হাসে।
বিবেক দিয়েছ তুমি প্রত্যেকের করে

ইচ্ছার স্বাধীনতা অর্পণ করেছ

হে রাজাধিরাজ, প্রত্যেকের পরে ।

উদারতা যেথা ক্ষীণ দূর্বলতা

মনন বিকাশ চাই সেথাই সেথা ।

কল্যাণ করিবার ব্রত রসনায় মম

জ্বলি উঠি যেন তোমার ইঙ্গিতে ।

অন্যের ক্ষতি দেখিলে যেন

গর্জে উঠি  পরতে পরতে ।

পেশি শক্তি যেন নাহি ডরি

No comments:

Post a Comment